রংপুরের পাঁচ উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে ৮৬জন আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া গেছে। নতুন করে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের ছয়জন রোগী পাওয়া গেছে।পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর আগে গত রোববার অপর জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।
পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, সর্বশেষ মঙ্গলবার পীরগঞ্জে সনাক্ত হওয়া ৮জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে আক্রান্ত রোগীর ৬জনের বাড়ি উপজেলার একই গ্রামে। তাঁদের মধ্যে পুরুষ চারজন, নারী একজন। তাঁরা শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। এরা হলেন- উপজেলার রামনাথপুরের দ্বারিয়াপুরের আশুরা বেগম (৬৫), রবিউল ইসলাম (৫৫), শাহিন মিয়া (২৩), শরীফ মিয়া (২২), খাসা মিয়া (৫২)। এর আগে রোববার চেরাগপুরের রওহাবুল মিয়া (৩২) এর শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে সনাক্ত করা হয়। মঙ্গলবার রাতে আরও ৩ জনের শরীওে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে সনাক্ত করা হয়। এর হলেন-দ্বারিয়াপুরের শিল্পি (২৮), মামুন (১৬) ও খোরশেদ ইসলাম (২৫)। তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে উপজেলার চেরাগপুর গ্রামের শমসের আলীর ছেলে সাদেক আলী ৪ অক্টোবর অসুস্থ্য গরু জবাই কওে চেরাগপুর গ্রামের ১৮টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করে। এছাড়াও ১১ অক্টোবর দ্বারিয়াপুরের টুটুল মিয়া বয়স্ক গরু জবাই করে দ্বারিয়াপুর গ্রামবাসীর মাঝে বিতরণ করে। তিনি আশংকা প্রকাশ করে জানান, ওই ২টি গ্রামে রোগির সংখ্যা বাড়তে পারে।
আক্রান্ত রোগীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় টুটুল মিয়ার একটি গাভি অসুস্থ হলে গত ১১ নভেম্বর জবাই করে গ্রামবাসীর মধ্যে বিতরণ করা হয়। এরপর ১২ অক্টোবর মাংস কাটাকাটির সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন তাঁদের শরীরে ঘা দেখা দেয়।
অসুস্থ্য শিল্পি, মামুন ও খোরশেদ জানান অসুস্থ গরু জবাই করার পর ৮-৯ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে তাঁরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাননি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য বলছে, গতকাল সোমবার পর্যন্ত রংপুরের পীরগাছায় ৩৮, কাউনিয়ায় ১৮, মিঠাপুকুরে ১২, গঙ্গাচড়ায় ৭, পীরগঞ্জে ৯ জনসহ মোট ৮৬ জন সন্দেহজনক অ্যানথ্রাক্স রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পীরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের নতুন আট রোগীর তথ্য এখনো এই হিসাবে যুক্ত হয়নি।
জেলা সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা জানান, জেলায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১১। তবে অ্যানথ্রাক্স সন্দেহজনক রোগীর সংখ্যা বেশি। এর কারণ অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের রোগীর নমুনা নিতে হলে শরীরে কাচা ঘা থাকতে হয়। কিন্তু ঘা শুকিয়ে গেলে আর নমুনা নেওয়া সম্ভব হয় না। তাঁরা কিছু রোগী পেয়েছেন, যাঁরা চিকিৎসা শুরু করাচ্ছেন, ঘা শুকিয়ে গেছে।
গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে দুই নারী ও পুরুষ মারা গেলে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
প্রযুক্তি সহায়তায়: softhost
Leave a Reply